শুক্রবার, ২৩ আগস্ট, ২০২৪

সাতক্ষীরায় এবার সাবেক স্বাস্থ্য মন্ত্রী রুহুল হকসহ ৮০ জনের নামে পৃথক হত্যা মামলা

 



খলিলুর রহমান,সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরায় সাবেক মন্ত্রী ডাঃ আ.ফ.ম. রুহুল হক, সাবেক পুলিশ চৌধুরী মঞ্জুরুল কবির, সাবেক এএসপি কাজী মনিরুজ্জামানসহ ৫৪ জন এবং সাবেক এসপি চৌধুরী মঞ্জুরুল কবির ও সাবেক এএসপি কাজী মনিরুজ্জামানসহ ২৬ জনের নামে পৃথক দুটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২২ আগষ্ট) সাতক্ষীরা সদর উপজেলার পদ্মশাখরা গ্রামের মৃত এজাহার আলী গাজীর ছেলে মোঃ শহর আলী গাজী বাদী হয়ে সাতক্ষীরার ১নং আমলী আদালতে এবং দেবহাটার দক্ষিণ নাংলা গ্রামের আব্দুল হান্নান গাজীর ছেলে রবিউল ইসলাম বাদী হয়ে সাতক্ষীরা ৭নং আমলী আদালতে পৃথক এই দুটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। আদালত বাদীর দায়ের করা অভিযোগ দুটি এফআইআর হিসেবে রেকর্ড করার জন্য সাতক্ষীরা সদর থানা ও দেবহাটা থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন।

সাতক্ষীরা সদর উপজেলার পদ্মশাখরা গ্রামের মৃত এজাহার আলী গাজীর ছেলে মোঃ শহর আলী গাজীর দায়ের করা অভিযোগে বর্ণিত আসামীরা হলেন সাবেক পুলিশ সুপার চৌধুরী মঞ্জুরুল কবির, সহকারী পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) কাজী মনিরুজ্জামান, সদর থানার ওসি এনামুল হক, সাবেক ডিবি’র ওসি আব্দুল হান্নান, এসআই আব্দুল মালেক, এসআই আবুল কালাম, ভোমরার ওহিদুল ইসলাম, ভোমরা দাসপাড়ার আশরাফুল ইসলাম, হাড়দ্দহার শহিদুল ইসলাম গাজী, আব্দুল গনি, পদ্মশাখরার মফিজুল ইসলাম, খানপুরের ইব্রাহিম খলিল, চৌবাড়িয়ার আব্দুস সাত্তার সরদার, মোশারফ হোসেন, পদ্ম শাখরার রেজাউল ইসলাম, ভোমরার আনারুল ইসলাম গাজী, ল²ীদাড়ীর জালাল উদ্দীন, হাড়দ্দহার খলিলুর রহমান, তরিকুল ইসলাম, এমাদুল ইসলাম, পদ্মশাখরার শহীদুল ইসলাম, ভোমরার আনসার আলী, পদ্মশাখরার আবু বক্কর ফকির, ইসমাঈল হোসেন, ভোমরার সুবাস ডাঃ, ল²ীদাড়ীর জালাল মোল্লা, হারু ঘোষ, পদ্মশাখরার আব্দুল গফুর গাজীসহ অজ্ঞাত আরো ১৫/২০ জন।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৪ সালের ১৭ জানুয়ারি বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে পুলিশের সাথে অন্যান্য আসামীগণ বাদীর বাড়িতে যেয়ে কাউকে না পেয়ে বাদীর ছোট ছেলে আবু হানিফ ছোটনকে ধরে নিয়ে যায়। পরদিন ১৮ জানুয়ারি ভোর সাড়ে ৫ টারদিকে ভোমরা স্থলবন্দরের লাভলু স্কেল এর সামনে মেইন রাস্তার উত্তর পার্শ্বে ফাঁকা জায়গায় শিশু আবু হানিফ ছোটনকে গুলি করে হত্যা করে।

বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নয়ন বড়াল মামলাটি আমলে নিয়ে এজাহার হিসেবে গণ্য করার জন্য সাতক্ষীরা সদর থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন।

বাদীপক্ষের আইনজীবী এড, আবু বাক্কার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে দেবহাটার দক্ষিণ নাংলা গ্রামের আব্দুল হান্নান গাজীর ছেলে রবিউল ইসলাম বাদী হয়ে দায়ের করা মামলার আসামীরা হলেন, সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা: আ.ফ.ম রুহুল হক, সাবেক এসপি চৌধুরী মঞ্জুরুল কবির ও সাবেক এএসপি সদর সার্কেল কাজী মনিরুজ্জামান, তৎকালিন এএসপি কালিগঞ্জ সার্কেল মনিরুজ্জামান, দেবহাটা থানার ওসি তারক বিশ্বাস, এসআই জিয়াউল হক, শেখ আলী আকবর, তপন কুমার সিংহ, ইউনুস আলী গাজী, পিএসআই তানভীর হাসান, এএসআই এফ এম তারেক, এএসআই মদন মোহন অধিকারী, কনস্টেবল দেবাশীষ অধিকারী, জাহাঙ্গীর, গৌতম সাহা, আনোয়ার, আব্দুল্লাহ, ইসমাইল, মাহাফুজুল হক, আবু জাফর, শহিদুল, রেজাউল,ইব্রাহীম, শাহ জাহান, আবুল হাসেম, হাদিস উদ্দিন, আ: মজিদ, দলিল উদ্দিন, নুর ইসলাম, মনজুরুল, মেহেদী, দেবহাটা গ্রামের নজরুল ইসলাম, মুজিবর রহমান, মোমিন গাজী, সাংবাড়িয়া গ্রামের মজিবর রহমান, নওয়াপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন সাহেব আলী, নংলা গ্রামের মাহমুদুল হক লাভলু, ঘোনাপাড়া গ্রামের সামছুর রহমান, মনতেজ, হাবিবুল্লাহ গাজী, মোস্তফা বিশ্বাস, মাহমুদ গাজী, রমজান গাজী, ছুটিপুর গ্রামের আব্দুর রশিদ, নওয়াপাড়া গ্রামের মনিরুজ্জামান মনি, এবাদুল গাজী, সিদ্দিক গাজী, মাঝের আটি গ্রামের আকবর আলী, নাজমুস শাহাদাত (নফর বিশ^াস), জারিফুল ইসলাম, সাতক্ষীরা শহরের কামালনগর গ্রামের কিলার কামরুল (কেটো কামরুল) এবং দেবহাটার কোমরপুর গ্রামের আবু মুসা।

মামলার বিবরণে জানা গেছে, বিগত ২০১৪ সালের ১৪ জানুয়ারি দেবহাটার নাংলা গ্রামের আব্দুল হান্নানের ছেলে আনারুল ইসলাম নিজস্ব মৎস্যঘের কাজ করছিল। এসময় উল্লেখিত ব্যক্তিদের সহযোগিতায় পূর্ব পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে আনারুল ইসলামকে পুলিশ আটকের চেষ্টা করলে তিনি জীবনের ভয়ে দৌড় দিলে পুলিশ তাকে গুলি করে হত্যা করে। এরপরও উল্লেখিত ব্যক্তিদের নির্দেশে মৃত্যু নিশ্চিত না পর্যন্ত নির্যাতন করতে থাকে। অথচ উল্টো মৃত আনারুল ইসলামকে আসামী করে মামলা দায়ের করা হয়। সে সময় রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ভিন্ন থাকায় মামলা করার সাহস পায়নি। তবে শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর পরিস্থিতি অনুক‚লে আসায় ন্যায় বিচার পাওয়ার দাবিতে মামলা রুজু করেছেন বলে বাদী রবিউল ইসলাম দাবি করেছেন।

আদালতের বিচারক মোহিতুল ইসলাম মামলাটি আমলে নিয়ে দেবহাটা থানার ওসিকে এফ.আই.আর হিসেবে গণ্য করার নির্দেশ দিয়েছেন। এমামলায় বাদী পক্ষের আইনজীবি এড. এ.টি.এম বাসারুতুল্লাহ আওরঙ্গী বাবলা ও এড. হাফিজুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেন।


শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 coment rios: