শুক্রবার, ২৩ আগস্ট, ২০২৪

ঠাকুরগাঁওয়ে রানীশংকৈলের চাকরি ছেড়ে ড্রাগন চাষে অভিকের বাজিমাত


মোঃ মজিবর রহমান শেখ, ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি:

এম এ জেড অভিক, বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি শুরু করতেন। চাকরি ছেড়ে তার নিজে কিছু করার ইচ্ছায় বাণিজ্যিকভাবে কৃষিকাজ শুরু করেন। ধান, গম ও প্রচলিত শষ্যের পরিবর্তে উচ্চমূল্যের ড্রাগন ফল চাষ করছেন তিনি। আর এতেই করেন বাজিমাত। ইচ্ছা ও মনোবল থাকায় নানা প্রতিবন্ধকতাকে হার মানিয়ে সাফল্যের স্বপ্ন দেখছেন। বুক ভরা আশা নিয়ে বলছেন, ড্রাগন মানে ডলার ব্যাংক। তাঁর বাগানে গেলে গাছে গাছে ঝুলতে থাকা ড্রাগন ফল আর অভিকের মুখের হাসিই আপনাকে বলে দেবে চাকরি ছেড়ে মোটেই ভুল করেননি এই যুবক। অভিক হলেন ঠাকুরগাঁও জেলার রাণীশংকৈল উপজেলার নন্দুয়ার ইউনিয়নের বনগাঁও গ্রামের প্রয়াত জননেতা আফসার আলীর ছেলে।

তিনি এখন ঐ এলাকার একজন মডেল কৃষক। তার দেখাদেখি আরও অনেকেই করছেন আধুনিক ফসলের চাষাবাদ। বিদেশি ফল ড্রাগন, বাজারে দাম ও চাহিদা ভালো হওয়ায় তিনি গতবছর ১ একর জমিতে ভিয়েতনামি জাতের ৪ হাজার ৫‍‍`শ টি লাল রঙের ড্রাগনের আবাদ শুরু করেছেন। প্রথম বছরেই ফল ধরেছিল গাছে। প্রথম দিকে ড্রাগন চাষের জন্য কাটিং, রোপণ, খুঁটি লাগানো, জিআই তার ও পরিচর্যা সহ আনুমানিক ৮ লক্ষ টাকা খরচ হয়। প্রথম বছরেই তিন লাখ টাকা উঠে এসেছে। অভিকের ড্রাগন বাগানে গিয়ে দেখা যায়, গাছে ঝুলছে প্রচুর পরিমাণ ড্রাগনফল ও ফুল। এ কারণে প্রতিদিন ড্রাগন তুলতে হচ্ছে। আকারে অনেক বড়। প্রতিদিন অনেকেই আসছেন তার ড্রাগন বাগান দেখতে। চার জন শ্রমিকের কর্মসংস্থান হয়েছে তার বাগানে। কৃষক উদ্যোক্তা অভিক জানান, ড্রাগনের জন্য বেলে-দোআঁশ মাটি বেশ ভালো। এর সাথে যদি এটেল মাটির মিশ্রন থাকে তাহলে আরও ভালো হয়। ড্রাগনের জন্য চারা বাইরে থেকে কেনার প্রয়োজন হয় না। একবার রোপণ করলে ঐ গাছ থেকেই কাটিং করে চারা তৈরি করা যায়। খুঁটি দিলে আশানুরূপ ফল পাওয়া যায়। সেই সাথে বাগানও সুন্দর হয়। আগামীতে আরো পাঁচ একর জমিতে ড্রাগন ফল চাষ করবেন বলে তিনি জানান।‍‍`এ বছর যে ড্রাগন হবে, সেখানে ৭০ শতাংশ খরচ উঠে আসবে আশা করি। পরের বছর দ্বিগুণ ফলন দেবে। ড্রাগনকে ভালোমতো যত্ন করলে ২০ থেকে ২৫ বছর ধরে ফল দেয়। রানীশংকৈল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ড্রাগন অনেক পুষ্টিসমৃদ্ধ ফল। এ ফল চাষে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়া সম্ভব। খাবারের পুষ্টির মানও নিশ্চিত করা যায়। অভিকের মতো শিক্ষিত উদ্যোক্তারা কৃষিতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করছেন। কৃষিকাজে শিক্ষিতরা এগিয়ে এলে কৃষি এগোবে, দেশ সমৃদ্ধ হবে।’


শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 coment rios: