মজিবর রহমান শেখ, ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি: ঠাকুরগাঁও জেলার রাণীশংকৈল উপজেলায় এক মাদ্রাসার সভাপতির বিরুদ্ধে মাদ্রাসাছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি গত ৮ জুলাই সোমবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকে মাদ্রাসার সভাপতি আব্দুল করিম পলাতক রয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১১ সালে স্থানীয়দের আর্থিক সহযোগিতায় রাণীশংকৈল উপজেলার ভরনিয়া গ্রামে ‘ভরনিয়া দারুল হাদীস ওয়াদ দাওয়াহ্ আস্-সালাফিয়্যা’ মাদ্রাসাটি গড়ে ওঠে। মাদ্রাসাটির দুটি শাখা রয়েছে। একটি ছাত্রীদের জন্য আবাসিক এবং অপরটি ছাত্রদের জন্য অনাবাসিক। আবাসিকে ১৫-১৬ জন কিশোরী থাকেন। মাদ্রাসা সভাপতি আব্দুল করিম রাতে প্রায় সময় আবাসিকে যাতায়াত করতেন এবং মেয়েদের জুস খাওয়াতেন। জুসে মেশানো থাকতো চেতনানাশক ঔষুধ। এরপর ছাত্রীদের ধর্ষণ করতেন। স্থানীয় সূত্রে আরও জানা যায়, ৮ জুলাই সোমবার সব ছাত্রীদের ছুটি দেওয়া হলেও তিন জন ছাত্রীকে সভাপতির নির্দেশে ছুটি দেওয়া হয়নি। মাদরাসার সভাপতি আব্দুল করিম ঐ রাতে গিয়ে ঐ তিন কিশোরীকে ঘুমের ঔষুধ মেশানো জুস খাওয়ান। কিশোরীরা ঘুমিয়ে গেলে গভীর রাতে মাদরাসার ভেতরে প্রবেশ করে এক কিশোরীকে ধর্ষণ করেন। বিষয়টি পরদিন জানাজানি হলে স্থানীয় লোকজন প্রতিবাদ জানান, এবং আব্দুল করিমের বাড়ি ঘেরাও করেন। ভুক্তভোগী কিশোরী জানান, সভাপতি আব্দুল করিম প্রায় সময়ই মাদ্রাসায় আসতেন এবং মাঝে মধ্যে ছাত্রীদের জুস খাওয়াতেন। জুসের মধ্যে ঘুমের ঔষুধ থাকতো। সবাই যখন ঘুমিয়ে যেত তখন সভাপতি তাদের ওপর নির্যাতন চালাতেন। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য মইন উদ্দীন কাবুল বলেন, ‘বিষয়টি জানাজানি হলে আমরা এক শিক্ষককে ঘটনাটি তদন্তে ছাত্রী ও অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলতে বলি। তাদের সঙ্গে কথা বললে, অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়। তারা সভাপতির বিচার চেয়েছেন।’
অভিযোগের বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে মাদরাসার সভাপতি আব্দুল করিমের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
রাণীশংকৈল উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. রকিবুল হাসান বলেন, ভরনিয়া গ্রামে ‘ভরনিয়া দারুল হাদীস ওয়াদ দাওয়াহ্ আস্-সালাফিয়্যা মাদ্রাসা’র আবাসিক ‘বালিকা হিফজুল কুরআন’ বিভাগে কিছু কোমলমতি ছাত্রী যারা ছিলো তাদের সাথে অনৈতিক কাজ করেছেন। এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেলে মাদ্রাসার সভাপতি আব্দুল করিমে বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
0 coment rios: