ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যাকান্ড নিয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে কথা বলেছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।
শনিবার বেলা ১১টার দিকে কালীগঞ্জ শহরের ভূষণ স্কুল মাঠে আয়োজিত জনাকির্ণ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা ও ইউনিয়নে নির্বাতিত সকল প্রতিনিধিরা। এসময় জনপ্রতিনিধিদের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এসএম জাহাঙ্গীর সিদ্দিক ঠান্ডু।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, কালীগঞ্জ উপজেলা পারিষদ সদ্য বিদায়ী উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ নেতা এসএম জাহাঙ্গীর সিদ্দিকী ঠান্ডু, কালীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আশরাফুল আলম আশরাফ, কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান শিবলী নোমানী, ভাইস চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম রাসেল ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শাহজনাজ পারভীনসহ ১৫ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও সকল ইউপি মেম্বার এবং সকল পৌর কাউন্সিলররা।
লিখিত বক্তব্যে কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান প্রবীন আওয়ামীলীগ নেতা এসএম জাহাঙ্গীর সিদ্দিক ঠান্ডু বলেন, ঝিনাইদহ-৪ নির্বাচনী এলাকার সকল পর্যায়ের জনপ্রতিনিধিবৃন্দ এখানে একত্রিত হয়েছি, যখন সমগ্র কালীগঞ্জবাসী শোকে মূহ্যমান। কালীগঞ্জবাসির নেতা সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার আমাদের মাঝে অনুপস্থিত। এরকম একটি সময়ে কথা বলার মত ভাষা আমাদের নেই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ম জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দ্দেশে প্রশাসনের সকল পর্যায়ে এমপি আনারের নিখোঁজ বা হত্যার বিষয়টি নিয়ে কাজ করছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও প্রশাসনের প্রতি সম্পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস আমাদের রয়েছে। প্রশাসন দ্রুতই পরিপূর্ণ তদন্তের মধ্য দিয়ে বিষয়টি উদঘাটন করবেন। তারপরও আমরা প্রতিনিয়ত জনগণের নানা প্রশ্নের সম্মুখিন হচ্ছি কিন্তু তার কোন সদউত্তর আমাদের কাছে নেই। এমন পরিস্থিতিতে তদন্তপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক বিচারের প্রত্যাশায় কিছু দাবি দেশবাসির সামনে তুলে ধরতে আপনাদের সহযোগিতা কামনা করছি।
এমপি আনার টানা তিনবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য। তার আগে পৌর কমিশনার ও উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি একজন জনপ্রিয় নেতা ছিলেন। এমন একজন জননেতার নিখোঁজ বা হত্যার শিকার হতে পাওে তা আমরা মেনে নিতে পারছি না। আমরা এ সংবাদ সম্মেলন থেকে তার ব্যবহৃত পাসপোর্ট, ঘড়ি, আংটি, চশমাসহ অন্যান্য জিনিসপত্র এবং কথিত রক্তমাখা পোষাক উদ্ধারের দাবি জানাচ্ছি। আনার এমপি মহোদয়ের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনগুলির সর্বশেষ অবস্থান দফাওয়ারী তথ্য প্রকাশ করতে হবে। আনার এমপি মহোদয়ের হত্যাকান্ড নিয়ে বিভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন বিভ্রান্তিমূলক মৃত্যুর তথ্য প্রচার করা হয়েছে যা জনমনে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। এমতাবস্থায় হত্যাকান্ডের তদন্তপূর্বক সঠিক তথ্য প্রকাশের দাবি জানাচ্ছি। খুনী জিহাদ মুম্বাইতে কখন থেকে কার অধীনে কসাইগিরী করত তার বিস্তারিত তথ্য প্রকাশের দাবি করছি। খুনীরা হত্যাকান্ডে যে সকল অস্ত্র ব্যবহার করেছে তার তথ্য এবং সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশের দাবি জানাচ্ছি। ২০০১-২০০৬ সাল পর্যন্ত রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক মিথ্যা মামলা ছাড়া আনার এমপি মহোদয়ের বিরুদ্ধে আর কোন মামলা ছিল না, অথচ তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন মামলার তথ্য প্রচার করা হচ্ছে। যা আমাদের জন্য অত্যান্ত দুঃখজনক ও বেদনার। জনপ্রিয় একজন এমপির বিরুদ্ধে অপ-প্রচার না করে সঠিক ও সত্য তথ্য প্রচারের দাবি জানাচ্ছি। বিগত ১৭ বছরে আনার এমপি মহোদয়ের বিরুদ্ধে কথিত মাদক, হুন্ডি, সোনা চোরাচালানের কোন মামলার প্রমাণ থেকে থাকলে তার তথ্য প্রকাশ করার দাবি করছি। এই হত্যাকান্ডকে সর্মথন জানিয়ে এবং সম্মানিত সংসদ সদস্যের চরিত্র হননের উদ্দেশ্য সামাজিক প্রচার মাধ্যমে একটি নিদ্দিষ্ট গোষ্ঠীর অসংখ্য একাউন্ট/ আইডি থেকে প্রতিনিয়ত যে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার দাবি করছি। আনার এমপি মহোদয়ের ব্যবহৃত মোবাইল থেকে যারা বিভিন্ন জনের কাছে এসএমএস এবং কল দিয়েছে তাদের পরিচয় উদঘাটন করে প্রকাশ করার দাবি জানাচ্ছি।
এসময় উপস্থিত জনপ্রতিনিধিরা জাতীয় সংসদ সদস্য মোঃ আনোয়ারুল আজীম আনার নিখোঁজ হয়ে থাকলে সন্ধান এবং হত্যা হয়ে থাকলে পরিকল্পনাকারী ও হত্যাকারীদের সর্ব্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেন।
0 coment rios: