বুধবার, ২৯ মে, ২০২৪

উপকূলীয় এলাকার দুর্যোগ পূর্বাভাসের তথ্য দিতে পারেন না আবহাওয়া অফিস

 


খলিলুর রহমান,সাতক্ষীরা : ২৬ মে রবিবার রাত ১০টার দিকে ঘূর্ণিঝড় রেমাল সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপকূলে আঘাত হানতে শুরু করে। যার তাণ্ডব চলে রাত পৌনে ৪টা পর্যন্ত। এসময় সাংবাদিকরা ঝড়ের গতিবেগ ও অবস্থান সম্পর্কে জানার জন্য নিয়মিত যোগাযোগ করা হচ্ছিল সাতক্ষীরা আবহাওয়া অফিসে। কিন্তু সেখানে কর্মরত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জুলফিকার আলী রিপন উপকূলীয় এলাকা সম্পর্কে তথ্য দিচ্ছিলেন সাতক্ষীরা শহরের সেটাও ধারণা নির্ভর করে।

ঝড়ের সময় রাত ১২টা দিকে সাতক্ষীরা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জুলফিকার আলী রিপনের সাথে যোগাযোগ করে ঝড়ের তথ্য সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সাতক্ষীরা শহরে সর্বোচ্চ ৭২ কিলোমিটার বেগে ঝড় প্রবাহিত হচ্ছে। উপকূলে এই বেগ ৯০ থেকে ১২০ কিলোমিটার হতে পারে।তখন জানতে চাওয়া হয়, উপকূলে বয়ে যাওয়া ঝড়ের প্রকৃত বেগ কত? অনেকটা নিরুপায় হয়ে তিনি বলেন, আমরা তো শুধু সাতক্ষীরা শহরেরটা নির্ণয় করতে পারি। উপকূলে তো আমাদের কোনো স্টেশন নেই। তখন আবারও প্রশ্ন করা হয়, আপনারা ওখান থেকে অন্য কোনো মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করেন কি না? উত্তরে তিনি বলেন, না।

এমন পরিস্থিতিতে আবহাওয়া জলবায়ু ও দুর্যোগের প্রকৃত পূর্বাভাস পেতে শ্যামনগরের উপকূলীয় এলাকায় আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার স্থাপনের দাবি তুলেছেন স্থানীয়রা। তাদের প্রশ্ন, উপকূলের তথ্য দিতে না পারলে শহরে আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার থেকে লাভ কী?

স্থানীয়রা জানান, দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চল সাতক্ষীরার শ্যামনগর বঙ্গোপসাগরের অতি নিকটবর্তী হওয়ায় ঘূর্ণিঝড়, লঘুচাপ, নিম্নচাপ লেগেই থাকে। দুর্যোগপ্রবণ হওয়া সত্ত্বেও সঠিক পূর্বাভাসের অভাবে বার বার ক্ষতিগ্রস্ত হয় উপকূলীয় জনপদ।তাই শ্যামনগরে আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার বা দুর্যোগ সতর্কীকরণ কেন্দ্র স্থাপন জরুরি।

পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসি এফ) এম কে এম ইকবাল হোসাইন চৌধুরী বলেন, দুর্যোগের সময় আবহাওয়ার সঠিক তথ্য না পেয়ে সুন্দরবন নির্ভরশীল অনেক জেলে বাওয়ালি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এছাড়াও আমাদের সুন্দরবনের ভেতরে ১২টি টহল ফাঁড়ি রয়েছে। তাদেরও সঠিক সময়ে আবহাওয়ার সঠিক তথ্য দেওয়া যায় না। এর ফলে বিভিন্ন সময়ের তারাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দুর্যোগপ্রবণ ও সুন্দরবন কেন্দ্রিক এই উপকূলবর্তী এলাকায় আবহাওয়া অফিস স্থাপন খুবই জরুরী।

সাতক্ষীরা-৪ আসনের সংসদ সদস্য এস.এম আতাউল হক দোলন বলেন, দুর্যোগপ্রবণ উপকূলীয় এলাকার সংসদ সদস্য হিসেবে জাতীয় সংসদে এ বিষয়ে আমি গুরুত্ব দিয়ে কথা বলব। দ্রুত সময়ের মধ্যে এই এলাকায় একটি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র বা দুর্যোগ পূর্বাভাস কেন্দ্র স্থাপন করা যায় সে ব্যাপারে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে।


শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 coment rios: