পিরোজপুর জেলার নাজিরপুর উপজেলা নির্বাচনে ভোটের সংখ্যা নিয়ে অসংগতির অভিযোগ উঠেছে। উপজেলাটিতে বেলা ৪ টার সময়ে ভোটগ্রহণ শেষে উপজেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা কর্তৃক প্রকাশিতে তথ্য বিবরণীতে ভোটের সংখ্যা ৩৫.৪৫ শতাংশ উল্লেখ করা হলেও নির্বাচনে ফলাফল প্রদানের সময় ভোটের সংখ্যা উল্লেখ করা হয়েছে ৩৪.৫৮ শতাংশ, যা পূর্বের তুলনায় ০.৮৩ শতাংশ কম।
উপজেলাটিতে ৭২টি কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত পুরুষ-মহিলা মিলে মোট ভোটার সংখ্যা ১৫৭৯৭৬ জন। পিরোজপুর জেলা নির্বাচন অফিসারের কার্যালয় ও উপজেলা পরিষদ নির্বাচন রিটার্নিং অফিসার মোঃ মিজানুর রহমান স্বাক্ষরিত বেলা ৪টায় সর্বশেষ প্রকাশিত নির্বাচন পরিস্থিতি প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী নাজিরপুর উপজেলায় প্রদত্ত ভোটের হার ছিল ৩৫.৪৫ শতাংশ। যা মোট ভোটার সংখ্যার অনুপাতে দাঁড়ায় ৫৬০০২ টি। তবে নাজিরপুর উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার মুহাম্মদ আলীমদ্দিন স্বাক্ষরিত চূড়ান্ত বার্তা প্রেরণ শিটে দেখা যায় মোট প্রদত্ত ভোটের সংখ্যা ৫৪৬৩০টি (যেখানে বৈধ ভোটের সংখ্যা ৫৪৪১৬টি ও মোট অবৈধ ভোটের সংখ্যা ২১৪টি) যা মোট ভোটারের ৩৪.৫৮ শতাংশ।
বিষয়টি বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়ালে এ নিয়ে অভিযোগ জানান, একই উপজেলার নিকটতম ৪৩১ ভোট ব্যবধানে হেরে যাওয়া প্রতিদন্দী মোহাম্মদ আলী সিকদার। তিনি অভিযোগে উল্লেখ করেন, নির্বাচন চলাকালীন সময় যেসকল ই ভি এম মেশিনের সমস্যা হয়েছে সেই সকল মেশিনের ফলাফল সর্বশেষ ফলাফল কাউন্টিং এ যোগ করা হয় নাই ৷ এছাড়া, জেলা রিটেনিং কর্মকর্তার প্রদত্ত পরিস্থিতি আপডেট ৩৫.৪৫ শতাংশ সেই হিসেবে ভোট হয় ৫৬০০২ । কিন্তু বেসরকারিভাবে প্রকাশিত ফলাফল যে শীটে ভোট সংখ্যা দেখিয়েছে ৫৪৬৩০ টি। যা শতকরা ৩৪.৫৮%। এইযে মাঝে ১৩৭২ ভোট বা .৮৭% কই গেলো?
চূড়ান্ত বার্তা প্রেরণ শিটে কী কারণে ১৩৭২ ভোট কম হিসেবে ফলাফল নির্ধারণ করা হলো এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার মুহাম্মদ আলীমদ্দিন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তিনি যে পরিমাণ ভোট প্রদান করা হয়েছিল সে অনুযায়ীই তথ্য প্রকাশ করেছিলেন। এ সময় তিনি জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার তথ্যের বিষয়ে তার সাথে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন।
এ বিষয়ে জেলা নির্বাচন অফিসার ও রিটার্নিং অফিসার মোঃ মিজানুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনিও তার সাক্ষরিত ফলাফলকে সঠিক হিসেবে দাবি করেন। এসময় তাকে উপজেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার সাথে তথ্যের অসংগতির বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি প্রশ্ন এড়িয়ে যান এবং অফিসে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন।
উল্লেখ্য, বুধবার (৮ মে) রাতে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন অফিসার মো. মিজানুর রহমান বেসরকারিভাবে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে নির্বাচ এস এম নূরে আলম সিদ্দিকী শাহীন ঘোষণা করেন। তিনি পিরোজপুর-১ আসনের সরকারদলীয় সংসদ সদস্য শ ম রেজাউল করিমের ছোট ভাই। এ উপজেলার চেয়ারম্যান প্রার্থী এস এম নূরে আলম সিদ্দিকী শাহীন (দোয়াত কলম) ১৯,২৭৯ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মোহাম্মাদ আলী শিকদার (ঘোড়া) পেয়েছেন ১৮,৮৪৮ ভোট। অন্য দুই প্রার্থী ডা. দীপঙ্কর নাগ (আনারস) পেয়েছেন ১০৭৬২ ভোট ও দীপ্তিষ চন্দ্র হালদার (মোটরসাইকেল) পেয়েছেন ৫৫২৭ভোট।
0 coment rios: