টি কে রনি: সম্প্রতি পঞ্চসার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে গোলাম মোস্তফা পাশ করার পর নিষিদ্ধ ঘোষিত কারেন্ট জাল, মাদক দ্রব্য ও অস্র বিক্রির সিন্ডিকেট বেড়েই চলেছে। পঞ্চসার ইউনিয়ন থেকে শুরু করে এখন গোটা জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে অবৈধ কারেন্ট জাল তৈরী ও জেলার প্রতিটি শহর ও শহরতলীতে ছড়িয়ে পরেছে পঞ্চসার ইউপি চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে পরিনত হচ্ছে মাদক ও অস্র বিক্রির হাটে।
কেউ পঞ্চসার ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলেই তার বিরুদ্ধে চলে মামলা-হামলাসহ গুম-খুনের মতো ঘটনা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এই প্রভাবশালী চোরম্যানের বিরুদ্ধে কথা বলতে গিয়ে পরতে হয়েছে হামলা-মামলার স্বীকারে। এমনকি অনেককে তার পালিত সন্ত্রাসী বাহিনি দিয়ে রাতের আধারে ধরে নিয়ে গিয়ে তার নিজ বাগান বাড়িতে হাত-পা বেধে মধ্যযুগিও কায়দায় বেদম প্রহার করার কথাও এখন ওপেন সিক্রেট হয়ে দাড়িয়েছে। এক কথায় এখন গড ফাদার বনে গেছেন পঞ্চসার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা।
এর আগেও মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার পঞ্চসার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান একসময়ের শীর্ষ অস্র ব্যবসায়ী ও ত্রাস গোলাম মোস্তফা কে তার বাসা থেকে অস্র সহ আটক করেছিল মুন্সিগঞ্জ ডিবি পুলিশ। মুন্সিগঞ্জ ডিবি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছিলেন। সদরের মুক্তারপুর থেকে গোলাম মোস্তফা কে আর্টক করা হয়।
এসময় তার মালিকানাধীন সূতা তৈরির ফ্যাক্টরি কিংফিশার ফাইবার এর ভেতর থেকে বিপুল পরিমাণ দেশী-বিদেশী অস্র কয়েক রাউন্ড গুলি ও কয়েক কোটি টাকার অবৈধ কারেন্ট জাল উদ্ধার করা হয়। পরে ঐ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মুন্সিগঞ্জ সদর থানায় একটি অস্র মামলা দায়ের করেন।
সদর থানা পুলিশ জানায় গোলাম মোস্তফা ও তার ছোট ভাই গোলাম কিবরিয়া আওয়ামী লীগ মনোনিত চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুল সাত্তার মিয়ার গণসংযোগ আটকে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়েজ আহম্মেদ পাভেল ও জেলা তরুণলীগের সভাপতি মিদূল দেওয়ান কে তুলে নিয়ে সূতা ফ্যাক্টরির ভেতরে আটকে তাদেরকে লক্ষ্য করে দুই রাউন্ড গুলিবর্ষণ করে। গুলি লক্ষ্যভেদ করলে তারা প্রাণে বেচে যান। এরপরে তাদেরকে প্রায় ১ঘন্টা মারধর করে মোস্তফা, কিবরিয়া ও তাদের ক্যডাররা। তাদের ব্যবহৃত ৩টি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। পরে সদর থানা পুলিশ তাদেরকে উদ্ধার করে।
কিছুদিন আগে মুন্সীগঞ্জের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করলে বিচারক রোকেয়া রহমান তা নামঞ্জুর করে। এ বিষয়ে মুন্সীগঞ্জ কোর্ট পুলিশের ইনচার্জ জামাল উদ্দিন জানান, অবৈধ কারেন্ট জাল উৎপাদন, সংরক্ষণ ও বিপণনের অভিযোগে মৎস্য সংরক্ষণ আইনে চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফাকে আসামি করে বিভিন্ন সময়ে পাঁচটি মামলা দায়ের করা হয়। পাঁচটি মামলার মধ্যে চারটির বাদী নৌপুলিশ ও একটির কোস্টগার্ড। ওই পাঁচ মামলায় রবিবার মুন্সীগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন তিনি। ২ কোটি ৫১ লক্ষ মিটার কারেন্ট জাল উদ্ধারের ঘটনায় গোলাম মোস্তফাকে প্রধান আসামি করে মুন্সিগঞ্জ সদর থানায় মামলা দায়ের করে নৌ পুলিশ। মামলা নং ৫৪ (০৮) ২২ ও ৫৫ (০৮) ২২। তার নামে একাধিক হত্যা মামলাও রয়েছে। অজ্ঞাত কারণে সে ধরাছোঁয়ার বাইরেই রয়ে গেলেন।
0 coment rios: