বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

আলফাডাঙ্গায়১৬ গ্রামে ঘূর্ণিঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ঘরবাড়ি, গাছপালা,বিদ্যুতের খুঁটি বিধ্বস্ত


আরিফুজ্জামান চাকলাদার: ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় ঘূর্ণিঝড়ে তিন ইউনিয়নে গতকাল বুধবার দিবাগত রাত একটা দিকে কমপক্ষে ১৬ টি গ্রামে ঘূর্ণিঝড়ের সঙ্গে শিলাবৃষ্টি হয়েছে এবং বেশ কয়েকটি গ্রাম বিধ্বস্ত হয়েছে।  উপজেলার পাচুড়িয়া, বানা ও বুড়াইচ ইউনিয়নের এসব গ্রামে ঘূর্ণিঝড়ের সঙ্গে শিলাবৃষ্টি হয়েছে। এতে অসংখ্য গাছপালা,ঘরবাড়ি, বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে ট্রান্সমিটার ও তার ছিঁড়ে অন্ধকার হয়ে যায় ভেঙে পড়েছে। অনেক জায়গায় সড়কের ওপরে গাছ পড়ে যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটেছে।


  সরজমিনে গিয়ে জানা যায়,বানা ইউনিয়নে দিঘলবানা,পণ্ডিত বানা,রুদ্রবানা, কঠুরাকান্দি,টাবনি,টোনাপাড়া,  শিরগ্রাম, গড়ানিয়া, আউশেরহাট,টোনা গ্রাম,পাকুড়িয়া,জয়দেবপুর, শিয়ালদি চরপাড়া বলপুটিয়া,পানিগাতি,বারানকুলা গহ কমপক্ষে ১৬টি গ্রামে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে। ঝড় ও শিলা বৃষ্টিতে কাঁচা-আধাপাকা ঘরবাড়ি, গাছপালা, পেঁয়াজ, রসুন, মসুরি, ধনিয়া, ধান, গমসহ কৃষি ফসলের ক্ষতি হয়েছে।বুড়াইচ ইউনিয়নে জাকারিয়া নামে এক কৃষক বলেন,পিয়াজ ১০ -১৫ দিন পরে ক্ষেত থেকে তুলা হতো।এই ঝড়ের ও শিলা বৃষ্টি কারন এখই তুলতে হবে। পানি লাগার কারনে এই পিয়াজ বেশি দিন সংরক্ষণ করা যাবে না।এতে কৃষক ফলন কম ও ক্ষতি মধ্যে পড়বে।


বারানকুলা গ্রাম পুলিশের  দফাদার বিলায়েত হোসেন বলেন,  পাকুড়িয়া ও জয়দেবপুর সবচেয়ে ক্ষতি হয়েছে। আমি সারা দিনে এ কাজ নিয়ে ব্যস্ত আছি।


বুড়াইচ ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি আকবর হোসেন জানান, ঝড়ে আমাদের গ্রামসহ আশেপাশে ৮-১০ টি  গ্রামে  ঘরবাড়ি, বিদ্যুৎ, ফসলি ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।


পাচুড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মিজানুর রহমান বলেন, আমার পাচুড়িয়া ইউনিয়ন ও পাশের বানা ইউনিয়নে ঝড়ে বেশ কয়েকটি গ্রামে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। খোঁজখবর নিয়ে পরবর্তী সময়ে বিস্তারিত তথ্য জানানো যাবে।’


পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আলফাডাঙ্গা সাব-জোনাল অফিসের এজিএম ফাহিম হাসান বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়ের আটটি মতো  গ্রামে বিদ্যুৎ বন্ধ রয়েছে।বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে ট্রান্সমিটার ও তার ছিঁড়ে গেছে।আজকে মধ্যেই বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে পারবো। বিদ্যুৎসংযোগ চালু করতে কাজ চলমান রয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তুষার সাহা বলেন,বয়ে যাওয়া ঘুর্ণিঝড়ে আট থেকে দশটি গ্রামে  চলতি ফসলে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পিয়াজ ১০,  সবজি ৪,ধনিয়া ২,ভূট্রা ১,গম ৫, মশুরি ৩ হেক্টর জমিতে আংশিক ক্ষতি মধ্যে পরবে।মাটিতে ফসল নুয়ে পড়ায় ১০ % ফলন কম হওয়ার আশংকা। পাট ও আউসে সরকারে প্রনদনা আসলে ক্ষতিগ্রস্হ কৃষকদের চাহিদার প্রেক্ষিতে অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা  বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া থাকবে।

এ ব্যাপারে আলফাডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শারমীন ইয়াসমীনের মোবাইল নাম্বারে একাধিকবার ফোন করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। তিনি ফোন রিসিভ করেননি।


আলফাডাঙ্গা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ কে এম জাহিদুল হাসান জাহিদ বলেন, ‘বুধবার রাত ১টার পরে ঘূর্ণিঝড়ে দুই ইউনিয়নের কমপক্ষে ২২টি গ্রামের শতাধিক কাঁচাপাকা বাড়িঘর ও কয়েক শত গাছপালা উপড়ে যায় এবং বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙ্গে তার ছিড়ে যায়।বিস্তীর্ণ জমির ফসল বিনষ্ট হয়েছে। অনেকেই ঘরবাড়ি হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে অবস্থান নেন। ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে কাজ শুরু করা হয়েছে।’


এ ব্যাপারে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. কামরুল আহসান তালুকদার বলেন, ‘স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে ঘটনাস্থলে পৌঁছে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা করতে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের সর্বাত্মক সাহায্য-সহযোগিতা করা হবে।


শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 coment rios: