এম এস সজীবঃ ভ্রাম্যমান হেলিকপ্টার রেস্টুরেন্ট, পটুয়াখালী সদর ও মির্জাগঞ্জ ঘুরে এবারে পৌঁছেছে দেশের উপকূলীয় জনপদ বরগুনার বেতাগী উপজেলায়। পৌঁছানোর পর ঠেকেই এটি স্থানীয়দের নজড় কাড়ছে ও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়েছে দাঁড়িয়েছে।
শনিবার (২৪ ফ্রেরুয়ারি) দুপুরে বেতাগী পৌর এলাকার পুরাতন ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত ভবন এলাকায় দেখা যায় মাঠের মধ্যে ঠাঁয় দাঁড়িয়ে আছে একটি হেলিকপ্টার। এটি দেখতে দূর-দুরান্ত থেকে ভিড় করছেন বিনোদন প্রেমীরা। কেউ ঘুরে দেখছেন হেলিকপ্টারটি কেউবা তুলছেন ছবি। ভেতরে ঢুকতেই অবাক হবেন যে কেউ। কারণ এটি আকাশচারী কোনো যান নয়, হেলিকপ্টারের আদলে তৈরি ভ্রাম্যমাণ রেস্টুরেন্ট।
ব্যতিক্রম এই হেলিকপ্টার রেস্টুরেন্টের প্রথম যাত্রা শুরু হয়েছে গত বছরের ১৬ ডিসেম্বর পটুয়াখালীর ঝাউতলায়। যা মানুষের চাহিদা অনুযায়ী সড়কপথে বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আর পটুয়াখালী সদর ও মির্জাগঞ্জ ঘুরে রেস্টুরেন্টটি বেতাগীতে পৌঁছানোর খবর ছড়িয়ে পড়তেই এক নজর দেখার জন্য দূর-দূরান্ত থেকে নারী-পুরুষ ও শিশু-কিশোররা ছুটে আসতে শুরু করেছে।
এমনই একজন দর্শনার্থী কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী সাইফা আক্তার বলেন, 'এটি সব মহলে প্রশংসিত হয়েছে। বিশেষ করে বেতাগী উপজেলায় নিয়ে আসার উদ্যোগকে আমি স্বাগত জানাই। এর ফলে আমরা বিনোদন পেলাম।'
হেলিকপ্টারের আদলে তৈরি এ রেস্টুরেন্ট বানিয়েছেন পটুয়াখালী সদর উপজেলার ছোট বিঘাই ইউনিয়নের কাজীর হাট বাজারের ওয়ার্কশপ মিস্ত্রি মেহেদী। হেলিকপ্টারটির পাখা ঘোরায় এটি দর্শনার্থীদের আরো কাছে টানছে। তাকে সহযেগিতা করেন তার দুই বন্ধু আরিফ ও আল-আমিন।
শুরুর দিকে তাদের এ কার্যক্রম নিয়ে স্থানীয়রা হাস্যরস করলেও পরে পেয়েছেন বাহবা। অভাবের সংসারে মেহেদীর লেখাপড়া করা সম্ভব হয়নি। সংসারে ঘানি টানতে একটি ওয়ার্কশপে কাজ শুরু করেন এবং তখন থেকেই ভিন্ন কিছু করার চিন্তা করেন সে। একপর্যায়ে বানিয়ে ফেলেন এ হেলিকপ্টারটি।
হেলিকপ্টার নির্মাতা মো. মেহেদী হাসান বলেন, 'বানাতে চেয়েছিলাম প্লেন। কিন্তু এতে খরচ বেশি হওয়ায় হেলিকপ্টার বানাই। অর্থের অভাবের কারণে আরিফুল ইসলাম ও আল-আমিনসহ আমরা তিন বন্ধু মিলে নির্মাণকাজ সম্পন্ন করি। হেলিকপ্টারের ভেতরে রেষ্টুরেন্টঁ বানিয়ে সারা বাংলাদেশ ঘোরার পরিকল্পনা করি এবং সে লক্ষ্যেই এটি তৈরি করেছি।'
উদ্যোক্তা মেহেদী হাসান বলেন, 'হেলিকপ্টার রেস্টুরেন্ট তৈরিতে প্রায় সাত মাস সময় লেগেছে। এতে প্রায় ২০ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। এ রেস্টুরেন্ট নিয়ে ৬৪ জেলায় ঘুরতে চাই আমরা তিন বন্ধু। হেলিকপ্টারের আদলে এটি তৈরি হওয়ায় এর নামকরণ করা হয়েছে ''ভ্রাম্যমান হেলিকপ্টার রেস্টুরেন্ট''।
0 coment rios: