স্টাফ রিপোর্টার- রাজধানীর উত্তরা এলাকায় ইভটিজিংয়ে বাধা দেওয়ায় কিশোর গ্যাং এর হামলায় মোঃ হাসনাত জামান নামে এক সমাজকর্মীর অবস্থা আশংকাজনক।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, বেশ কিছুদিন ধরে রাজধানীর উত্তরা ও তুরাগ এলাকায় কিশোর গ্যাং এর উঠতি বয়সি বখাটে সদস্যরা প্রতিনিয়ত ইভটিজিং, মাদক ব্যবসা, অস্ত্রবাজী, চাঁদাবাজী ও মারামারিসহ খুন খারাপি করে আসছে।
সম্প্রতি উত্তরা এলাকায় শিক্ষার্থীদের নিয়ে ইভটিজিং ও নানা অশ্লীল আচরনে বাধা দেয় সমাজকর্মী হাসনাত জামান। এতে কিশোর গ্যাং ক্ষিপ্ত হয়ে গতকাল সকালে পরিকল্পিতভাবে হাসনাত জামানকে একা পেয়ে তাকে বেধরক মারধর করে। তারই জের ধরে গতকাল বিকালে পুনরায় ওই কিশোর গ্যাং গ্রুপটি হাসনাত জামানের উত্তরার ১৩নং সেক্টরের বাসায় এসে ব্যাপক হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট করে। এতে হাসনাত জামান মারাত্বকভাবে আহত হলে দ্রুত তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
তার পরিবারের সদস্যরা জানান, গতকাল সকালের ঘটনার পরপরই কিশোর গ্যাং গ্রুপটির ভয়ে হাসনাত জামান থানায় গিয়ে একটি জিডি করেছিলেন। জিডির বিষয়টি জানতে পেরে কিশোর গ্যাং গ্রুপটি গতকাল সকাল থেকেই কয়েক দফা তার বাসায় হামলা চালিয়ে জিডি উঠানোর হুমকি দেয়।
এ ব্যপারে উত্তরা-পূর্ব থানার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মো. ফারুক বলেন, বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়নি, তাই যাইনি। সময় পেলে এক সময় গিয়ে খোঁজ-খবর নেব।
এদিকে, থানায় অভিযোগ করার পর থেকে স্থানীয় সাংসদ ও কমিশনারের লোকজন কিশোর গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে করা অভিযোগ তুলে নেওয়া জন্য হাসনাত জামানের পরিবারকে চাপ দিয়ে যাচ্ছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
উল্লেখ্য, রাজধানীর উত্তরা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় কিশোর গ্যাং সদস্যদের ভয়ংকর হয়ে উঠেছে। গত ৩ বছরে উত্তরা ও তুরাগ এলাকায় কিশোর গ্যাং সদস্যদের হাতে অন্তত ২০টি খুনের ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে। সম্প্রতি রাজধানীর উপকণ্ঠে আশুলিয়ার হাজী ইউনুস আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারের মর্মন্তুদ মৃত্যুর পেছনে রয়েছে কিশোর গ্যাংয়ের নিষ্ঠুরতা। বস্তুত চাঁদাবাজী, অস্ত্রবাজী, মাদক দিয়ে শুরু হলেও কালক্রমে গ্যাং সদস্যরা জড়িয়ে পড়ছে বড় কোনো অপরাধে; এমন কী ভয়ংকর খুনি হয়ে উঠছে, যা মোটেই কাম্য নয়। অভিযোগ রয়েছে, সরকারী দলের নেতারা ব্যক্তিস্বার্থ হাসিলে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের পৃষ্ঠপোষকতা করায় বন্ধ হচ্ছে না গ্যাং কালচার।
0 coment rios: