শুক্রবার বিকেল চারটায় গণভবনে শুরু হয় প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন, চলে সোয়া এক ঘণ্টা। বেশ উৎফুল্ল এবং সপ্রতিভ দেখা গেছে সরকারপ্রধানকে। বিভিন্ন বিষয়ে স্বভাবসুলভ রসিকতাও করেছেন। ১৫ মিনিটের লিখিত বক্তব্যে তিনি জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে বাংলাদেশের অংশগ্রহণের কথা তুলে ধরেন। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে তার কর্মসূচীগুলোর কথা জানান। তিনি বলেন, সামগ্রিক বিবেচনায় এবারবার অধিবেশনে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ অত্যন্ত ফলপ্রসূ হয়েছে।
দিল্লিতে জো বাইডেনের সঙ্গে সেলফি এবং ওয়াশিংটনে মার্কিন সরকারের নিরাপত্তা উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানতে চাওয়া হয়; নির্বাচন নিয়ে কোনো কথা হয়েছে কি না। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের পররাষ্ট্রনীতি হচ্ছে, সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়। সে অনুযায়ী, আমরা সবার সঙ্গেই বসতে পারি। তিনি বলেন, নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন দেশের কেনো এতো মাথাব্যথা? নির্বাচনের ব্যাপারে আমাদের নিজেদেরও দোষ আছে। নির্বাচন নিয়ে তাদের কাছ থেকে কথা শুনতে হয়, এটা দুর্ভাগ্যজনক। যখন দেশে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল হয়েছিলো, নির্বাচনকে পরিণত করা হয়েছিলো; তখন কিন্তু তারা কথা বলেনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি জোট ২০০৮ সালে ২৯টি সিট পেয়েছিল। পরে ১টা বেড়ে ৩০ হয়। এই জোট ২০১৪ সালে আন্দোলনের নামে অগ্নিসন্ত্রাস করেছে। মানুষ হত্যা করেছে।
তিনি বলেন, আমরা নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করেছি। ছবিসহ ভোটার তালিকা ও স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স প্রবর্তন করেছি। আমরা আওয়ামী লীগই রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম করে মানুষের ভোটের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছি। তাদের (বিদেশিদের) বলে দিয়েছি, আমাদেরকে নির্বাচন শেখাতে হবে না। আওয়ামী লীগের শাসনামলে দেশের উন্নয়নের সার্বিক চিত্র তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার সন্দেহ আছে, এই উন্নয়ন ঠেকানোর জন্য কেউ কিছু করছে কি না। নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন দেশের তৎপরতা উল্লেখ করে বলেন, সন্দেহ হয়, অবাধ নির্বাচন নিয়ে এতো মাতামাতি কেনো? আসল উদ্দেশ্য নির্বাচন বানচাল করে দেওয়া কি না, সন্দেহ থেকে যায়।
তিনি বলেন, প্রতিদ্বন্দ্বী অবশ্যই থাকতে হবে। বিরোধী দল থাকতে হবে। কিন্তু সংসদে যাদের একটা সিটও নাই, তার বিরোধী দল হতে পারে না। আমরা ওয়েস্টমিনস্টার পদ্ধতির গণতন্ত্র চর্চা করি। সংসদে আসন না থাকলে বিরোধী দল বলা যায় না। রাস্তায় ঘেউ ঘেউ করে বেড়ালে তাকে বিরোধী দল ধরা হয় না। মার্কিন নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কথা বলেছেন কি না, এই প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তত্ত্বাবধায়ক নিয়ে কেউ কিছু বলেননি। ২০০৭ সালের অভিজ্ঞতার পর আবারো তত্ত্বাবধায়ক চান, এই প্রশ্ন করে শেখ হাসিনা বলেন, এই ব্যবস্থা বিএনপিই নষ্ট করেছে।
0 coment rios: