রবিবার, ২৯ অক্টোবর, ২০২৩

কনস্টেবল আমিরুল হত্যায় গ্রেপ্তার দুজন বিএনপির সদস্য: ডিএমপি কমিশনার


ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেন, শনিবার একটি রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি ছিল। সেখানে পুলিশ কনস্টেবল আমিরুল ইসলাম পারভেজ সন্ত্রাসীদের হাতে নির্মমভাবে হত্যার শিকার হয়েছেন। রোববার দুপুরে রাজারবাগ পুলিশ লাইনের শহীদ এসআই শিরু মিয়া মিলনায়তনে নিহত পুলিশ সদস্যের জানাজা শেষে এসব কথা বলেন তিনি। কনস্টেবল হত্যায় পল্টন থানার মামলায় শামীম রেজা ও মো. সুলতানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। শামীম গাইবান্ধা পলাশবাড়ি উপজেলার যুবদলের আহ্বায়ক। তাকে সেখানে থেকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সুলতানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ডেমরা এলাকা থেকে।

 তিনি আরও বলেন, এই নৃশংস ঘটনার যেন ন্যায় ও যোগ্য বিচার হয়, এজন্য যা যা কিছু করা দরকার ডিএমপির পক্ষ থেকে করা হবে। ইতোমধ্যে আমরা ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ ও বিশ্লেষণের পর ছবি মিলিয়ে দুজনকে শনাক্ত করে গাইবান্ধা থেকে একজন এবং ঢাকার ডেমরা থেকে একজনকে গ্রেপ্তার করেছি। খোঁজ নিয়ে ও জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে- দুজনই বিএনপির রাজনীতিতে জড়িত। 

 হাবিবুর রহমান বলেন, কনস্টেবল আমিরুল  পুলিশের গর্বিত সদস্য। তাকে কীভাবে পিটিয়ে ও নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। তার মৃত্যু নিশ্চিত করার পরও কীভাবে তাকে লাথি দেওয়া হয়েছে- যা তাকে শুধু অপমান নয়, পুরো পুলিশ বাহিনীকে অপমান করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, এই ঘটনার সঙ্গে কারা কারা জড়িত ও কাদের ইন্ধন রয়েছে, তাদের সবাইকে খুঁজে বের করে আইনের আওতায় নিয়ে আসবো। সেসময় একটি রাজনৈতিক দলের সমাবেশ হয়েছিল, সেখানে দলটির সব কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। একাধিক স্থানে হামলা, প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা ও গেট ভাঙা হয়েছে। বিএনপির হামলার এ উদাহরণকে আমরা বর্তমানে ফিলিস্তিনে গাজা উপত্যকায় যেভাবে হামলা চলছে তার সঙ্গে মেলাতে পারি। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি বর্বর হানাদার বাহিনীর হাতেও এমন হামলা আমরা দেখিনি।

তিনি আরও বলেন, ১১৪ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। কারো কারো অবস্থা সংকটাপন্ন। একটু আগে খবর পেয়েছি আরও এক পুলিশ সদস্যের জীবন সংকটাপন্ন হামলাকারীদের অনেকে সাংবাদিক বেশে এসেছিল। তারাও এসেছিল ব্যাগ নিয়ে। ব্যাক-প্যাকের ভেতর থেকে বের হয়েছে ককটেল। আমি মনে করি, বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে এসব করা হচ্ছে। কেবল পুলিশ, নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠী রাজনৈতিক জনগোষ্ঠী নয়, পুলিশ সাংবাদিকসহ নগরবাসী মিলে এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কি গ্রেপ্তার, এমন প্রশ্নের জবাবে কমিশনার বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনা হয়েছে। এরপর যদি তেমন কিছু তদন্তে পাই তখন দেখা যাবে। আপাতত তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

 এদিকে জানাজার নামাজ পূর্ব বক্তব্যে ডিএমপি কমিশনার বলেন, বিএনপি মহাসমাবেশের নামে ভাঙচুর, অগ্নি সংযোগ, পুলিশের কর্তব্য কাজে বাধা ও পুলিশ সদস্যকে হত্যা করেছে। তার পরিবারের ক্ষত হয়তো পূরণীয় নয়। তবে আমরা ডিএমপি আমিরুলের পরিবারের পাশে থাকবো। তার পরিবার ও সন্তানদের লেখাপড়ার সব খরচ বহন করবে ডিএমপি। এদিকে বাদ জোহর রাজারবাগ পুলিশ লাইনের শহীদ এসআই শিরু মিয়া মিলনায়তনে তার জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে আমিরুলের মরদেহে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান আইজিপি, ডিএমপি কমিশনার ও পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন। আইজিপি ও ডিএমপি কমিশনার গভীর শোক প্রকাশ করেন।


শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 coment rios: