প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যেকোনো মূল্যে আগামী জাতীয় নির্বাচন হবে। বিএনপির নির্বাচন বানচালের আন্দোলন উপেক্ষা করে জনগণ অবাধে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবে। বিটিভি, বাসস, ইউএনবি শনিবার রাজধানীর কাওলায় সিভিল এভিয়েশন মাঠে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ আয়োজিত মহাসমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। হযরত শাহজালাল (রহ.) বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল উদ্বোধন উপলক্ষে গত ৭ অক্টোবর এই জনসভা করার কথা ছিল আওয়ামী লীগের। কিন্তু বৈরি আবহাওয়ার কারণে সেদিন সমাবেশ না করে কর্মসূচী পেছানো হয়। শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপির মতো লুটেরা, দুর্নীতিবাজ, খুনি, ডাকাত ও চোরেরা ক্ষমতায় এলে তারা শুধু দেশকে ধ্বংস করে দেবে। তারা যেন দেশকে ধ্বংস না করে, এজন্য একমাত্র নৌকা প্রতীকই পারে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে। আপনাদের প্রতি আমার আহ্বান, আগামী নির্বাচনে নৌকার পক্ষে ভোট দিন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি আগামী নির্বাচনে অংশ নেবে কি না তা নিয়ে দ্বিধায় রয়েছে। নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য তাদের নেতা কে হবেন? তাদের প্রধানমন্ত্রী কে হবেন? সেই দুর্নীতিবাজ পলাতক অপরাধী নাকি এতিমদের টাকা আত্মসাৎকারী তা স্পষ্ট নয়। তাই বিএনপি আগামী জাতীয় নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করছে। আমি জনগণকে সতর্ক থাকার অনুরোধ করব, যাতে বিএনপি তা করতে না পারে। আপনারা যদি উন্নয়ন চান তাহলে ভোট দিন, যদি ধ্বংস চান তাহলে বিএনপি-জামায়াতকে ভোট দিন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, জনসমর্থন ছাড়া কোনো জায়গায় ধর্ণা দিয়ে ক্ষমতায় যাওয়া যায় না। খালেদা জিয়া ভোট চুরি করেছিলেন। তাই তাকে পদত্যাগ করতে হয়েছিলো। কারণ বাংলাদেশের মানুষ ভোটচোরাদের ক্ষমতায় রাখে না। আন্দোলনের মধ্যদিয়ে আমরা ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করেছি। ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার সরিয়ে ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়ন করেছি। আইন করে নির্বাচন কমিশন গঠন করেছি, যাতে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হয়।
তিনি বলেন, অন্য কেউ ক্ষমতায় এলে দেশ ধ্বংস করে দেবে। পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, ফ্লাইওভার ও বঙ্গবন্ধু টানেলসহ বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ছিলো বলেই এসব কাজ করা সম্ভব হয়েছে। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পুরো ঢাকা শহরকে ঘিরে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করা হবে। শহরের সব রেলক্রসিংয়ে ওভারপাস করা হবে।তিনি বলেন, বন্দুকের নলে ক্ষমতায় আসা বিএনপি সব সময় আওয়ামী লীগকে ধ্বংসের চেষ্টা করেছে। বিএনপি জামায়াত এখনো ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। খালেদা জিয়া বাংলাদেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না। তার হৃদয়ে পাকিস্তান, পেয়ারে পাকিস্তান। তারেক রহমানের কঠোর সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার মা মরে মরে অবস্থা। সে কেনো মাকে দেখতে আসে না? আমি তো বলব-সে তার মাকে দেখতে আসুক। আজ খালেদা জিয়াকে বিদেশ নেওয়ার জন্য বিএনপি অনশন করে। কিন্তু বিদেশে নেবে কে? ছেলে তো আসে না। কোকো মারা যাওয়ার পর বেগম জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে ফিরে আসার কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, অনেকে রিজার্ভ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। রিজার্ভের টাকা আমরা মানুষের কল্যাণে ব্যয় করেছি। করোনার টিকা কিনেছি। খাদ্য ও জ¦ালানিসহ প্রয়োজনীয় সব দ্রব্য আমদানি করেছি। কাওলার সমাবেশকে কেন্দ্র করে সকাল থেকেই খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে হাজির হতে থাকেন নেতাকর্মীরা। ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন শাখা ও ইউনিট থেকে মিছিল নিয়ে নেতাকর্মীরা জড়ো হন কাওলা মাঠে। প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছার আগেই জনসভাস্থল কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়।
0 coment rios: